কর্মক্ষেত্রে নারীরা এখনো সমমজুরি ও কর্তৃত্ব তৈরি করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্তিক দলের (জাসদ) একাংশের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেত্রী শিরীন আখতার। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাইকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে, “শ্রম কখনো সস্তা নয়, শ্রমিক দয়ার পাত্র নয়।” আমরা নারীরা এখনো কর্মক্ষেত্রে সমমজুরি, সমমর্যাদা ও কর্তৃত্ব তৈরি করতে পারিনি। এজন্য আমাদের এখনো বহুদূর যেতে হবে। নারীশ্রমিকদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে, তাদের কর্মের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কর্মক্ষেত্রে মানসম্মত শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র (ডে কেয়ার সেন্টার) প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

বুধবার (১ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক শ্রমিক সমাবেশ এসব কথা বলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন (এনজিও) কর্মজীবী নারীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিরীন আখতার। মহান মে দিবস ও কর্মজীবী নারীর ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন। সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য লাল পতাকা মিছিল প্রেসক্লাব থেকে পল্টটন মোড় প্রদক্ষিণ করেন। ‘সকল ক্ষেত্রে অধিকার মর্যাদায়, নারী থাকবে পৃথিবীর বৃহৎ আঙ্গিন’ স্লোগানে আয়োজিত কর্মসূচির প্রতিপাদ্য ছিল ‘সব শ্রমিকের জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত কর।’

কর্মজীবী নারীর সহ-সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমলের সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালন সানজিদা সুলতানা। সমাবেশে বক্তব্য দেন দক্ষিণ এশিয়াভিত্তিক নারীবাদী সংগঠন এশিয়া প্যাসিফিক ফোরাম অন উইমেন, ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এপিডব্লিউএলডি) ভারত, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়শিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন ও সিঙ্গাপুরসহ আটটি দেশের প্রতিনিধি।

আরো বক্তব্য দেন কর্মজীবী নারীর সহ-সভাপতি ও ট্রেড ইউনিয়ন নেত্রী শাহীন আক্তার পারভীন, শ্রমিক নেত্রী রাবেয়া আক্তার, শেখ শাহনাজ, নার্গিস আক্তার, জাকিয়া সুলতানাসহ অন্যরা।

এপিডব্লিউএলডির প্রোগ্রাম অফিসার অ্যান্ডি কিপ্টা ও ইন্দোনেশিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন নেতা এমিলিয়া ইয়ান্তি শ্রমিক সমাবেশে কর্মজীবী নারী উত্থাপিত দাবিগুলোর প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। বৈষম্য দূর করে নারী শ্রমিকের জন্য সামাজিক ন্যয়বিচার ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তারা।

মিরপুর অঞ্চলের গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা আঞ্চলিক ফোরামের নেত্রী জাকিয়া সুলতানা গৃহশ্রমিকদের কাজের কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট এবং মাতৃত্বকালীন ছুটি শ্রম আইনে অর্ন্তভুক্ত করার দাবি জানান।

সভাপতিরর বক্তব্যে উম্মে হাসান ঝলমল বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকেরা প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকেন। এ সব বৈষম্য দূর করতে আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে। যেখানে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিয়ে কার্পণ্য করা হবে, সেখানেই সংগঠিত হয়ে অধিকার আদায় করতে হবে।

কর্মজীবী নারীর প্রোগ্রাম সমন্বয়ক রাজীব আহমেদ পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

News Link: priyobanglanews24

Pin It on Pinterest